ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকের সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আজ সোমবার (১৫ মার্চ) মো: মুজাহিদ আলীকে মনোনয়ন প্রদান করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
তাকে মনোনয়ন প্রদান করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। মনোনয়ন প্রদানের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সিংচাপইড় এলাকায় মুজাহিদ আলীকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
নেতাকর্মীর দাবি সে একজন অযোগ্য এবং জনগণের অপছন্দনীয় লোক। ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যিনি নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রদান করায় চরম ক্ষোভ জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দরা। ২০১৬ সালের ৩১শে মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন এবং সেসময় তিনি বিভিন্ন সভায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সাহাব উদ্দিন সাহেল বিপুল ভোটে নির্বাচিত হোন।
নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, মুজাহিদ আলী দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিগত দুটি নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেছিলেন। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচন ও পরবর্তীতে চেয়ারম্যান সাহেলকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি করার পর উপ নির্বাচনে পুনরায় তিনি নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেন। যে ব্যক্তি বারবার দলীয় আদেশ অমান্য করে তাকে মনোনয়ন প্রদান করায় চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগে। সক্রিয় ও জনপ্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তি কিভাবে দলের মনোনয়ন পায় সেটাও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রতি।
গত ২০১৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী সাহাব উদ্দিন সাহেল জানান, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে আমি বিপুল ভোটে জয় লাভ করি। আমি জয়লাভ করার পর থেকে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন স্হানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। বিভিন্ন ভাবে আমাকে হয়রানি করতেন এমপি মানিক। এরপর ২০১৭ সালের ১৭-মে হাওর রক্ষা বাধঁ নির্মাণ কাজের অনিয়মে প্রতিবাদ করায় আমাকে বিভিন্ন ভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে এমনকি আমাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একদিকে আমাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে অন্যদিকে আমার ইউনিয়নে তরিঘরি করে উপ নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। যদিও প্রথম উপ নির্বাচন মহামান্য উচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল করা হয়েছিলো। এবং গত ১০ মার্চ আমার উপর করা মামলার অসত্য এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রমাণিত হওয়ায় বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।
সাহেল আরও বলেন, এমপি মানিকের প্রতিহিংসার শিকার আমি। তিনি তার ইচ্ছেমতো পছন্দের ব্যক্তিকে নৌকা প্রদানে করেন। আমার অবর্তমানে উপ নির্বাচনে আশিকুল ইসলাম নামের একজনকে তিনি প্রথমে নৌকা প্রতীক এনে দিয়েছিলেন, কিছুদিন আবার তাকেও ছুড়ে ফেলে দিয়ে মুজাহিদকে আবিষ্কার করেন তিনি। তার এমন নাটকীয় রাজনীতির শিকার হয়ে অনেক নেতা কর্মীর জীবন নষ্ট হয়েছে।
সাহেল অভিযোগ করে বলেন, “এমপি মানিক আমাদের প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে তার বাপ দাদার সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে। তার কথামতো তাকে মনোরঞ্জন করে যে চলবে এবং তাকে বিপুল অংকের টাকা প্রদান করে তাকেই নৌকা প্রতীক এনে দেয়।” সাহাব উদ্দিন সাহেল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ করে বলেন, আওয়ামীলীগকে বাচাতে প্রকৃত মুজিব সৈনিকদের মূল্যায়ন ও এমপি মানিকের লাগাম টেনে ধরার আহবান জানান