মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের কালকিনিতে চুরির অভিযোগ এনে আসিক চৌকিদার নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বাধা দিতে এলে নির্যাতনের শিকার হন তার মা মনিরা বেগমও।
দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ। ভিডিওর কিছু অংশ ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
আরো পড়ুন: বিয়ের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া নিতে চাইলে যোগাযোগ করুন
গুরুতর অবস্থায় আসিককে ভর্তি করা হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। যদিও পুলিশ বলছে, অভিযোগ পেলে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাদারীপুরে কালকিনি উপজেলার ডাসার থানাধীন কমলাপুর বাজারের কালাই শিকদারের হার্ডওয়্যারের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে।
এতে বেশ কিছু টাকা ও মোবাইল ফোন খোয়া যায়। এ চুরির ঘটনায় অভিযোগ এনে পূর্ব কমলাপুর গ্রামের হিমজাল চোকিদারের নবম শ্রেণির স্কুল পড়ুয়া ছাত্র আসিক চৌকিদারকে (১৫) বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান কালাই শিকদারের ভাই এলাকার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম ভাষাই।
পরে তার নেতৃত্বে ভাষাইয়ের ঘরে বসেই বোন জামাই আবু হাওলাদার, স্ত্রী পারভিন ও এমদাদ সরদারসহ ৮ থেকে ১০ জন মিলে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ওই স্কুলছাত্রকে।
খবর পেয়ে আসিকের মা মনিরা বেগমে এগিয়ে আসলে তাকেও বেদম মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে শুক্রবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় আসিককে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে।
আর তার মা মনিরা বেগমকে দেয়া হয় প্রাথমিক চিকিৎসা।
নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্র আসিক বলেন, জোর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই ঘণ্টা নির্যাতন চালানো হয়। ব্যথায় শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে গেছে। দুই দিন ধরে রাতে ঘুমাতেও পারি না।
আসিকের মা মনিরা বেগম বলেন, মিথ্যে চুরির অপবাদ দিয়ে ছেলেকে ৮ থেকে ১০জন মিলে নির্যাতন করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
অভিযুক্ত রেজাউল করিম ভাষাই পলাতক হওয়ায় ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ করেননি।
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াদ মাহমুদ জানান, স্কুলছাত্র আসিকের শরীরে আঘাতের বেশ চিহ্ন রয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হতে পারে।
কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল ওহাব জানান, পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়েছে এবং আমি যতটুকু জানি তারা বিষয়টি সমাধান করেছে তবে আমাদের কাছে অভিযোগ আসলে আমরা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।