জকিগঞ্জ প্রতিনিধি:: সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের ইছামতি (খ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছ ও গাছের ডাল কেটে অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে করোনায় বন্ধ হয়ে যায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইছামতি (খ) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পতিতে থাকা ২টি বেলজিয়াম ও ১টি নীম গাছসহ গাছের রড় বড় ডাল পালা কেটে বিক্রয় করা হয়েছে বলে ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে গত বুধবার (২২ জুলাই) জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্থানীয়দের পক্ষে হরাত্রিলোচন গ্রামের মৃত আখন মিয়ার ছেলে আব্দুশ শুক্কুর, হাজ্বি আব্দুল বারী ছেলে ফয়সাল আহমদ, সিরাজুল ইসলাম মাখন মিয়ার ছেলে এনামুর রহমান, করামত আলীর ছেলে কালা মিয়াসহ ৪৭ জনের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের সারংদেব, হরাত্রিলোচন, হাজারিচক গ্রামের বাসিন্দাদের একটি মাত্র প্রথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের সভাপতি অসৎ, খারাপ ও সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎকারী ও প্রভাবশালী প্রকৃতির লোক। বিগত কিছু দিন পূর্বে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের বড় বড় ৩টি গাছ যার বিবরণ ২ দুটি বেলজিয়াম ও ১টি পরিবেশবান্ধব নীম গাছ এছাড়া বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রাঙ্গনে অবস্থিত আনুমানিক ১০-১২টি গাছের বড় বড় সব ডালপালা কেটে কোন প্রকার নিলাম বিজ্ঞপ্তি ও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধ ভাবে কর্তন করে বিক্রয় করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পুরাতন ঘরের চালের পুরাতন টিন ও অন্যান্য লোহা জাতীয় পদার্থ অবৈধভাবে প্রভাব কাটিয়ে সভাপতি নিজ বাড়িতে নিয়ে যান, যার প্রমান এখনো বিদ্যমান বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
অভিযোগকারীরা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কে জিজ্ঞেস করলে জানান, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের সমন্বয় যাহা অবাস্তবত, উক্ত গাছ গুলো কর্তন করে স্কুলের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না করে সভাপতি ও উনার সহযোগীগন দিবালোকে প্রাকাশে নিয়ে যান।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বিদ্যালের উন্নয়ন ও সংস্কর কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি কারেছেন। কোন রকম ঘষা-মাজ, নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার ও অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের মাধ্যমে বিগত অর্থ বছরের উন্নয়ন বাজেটের টাকা উন্নয়ন না করে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সিংহভাগ আত্মসাৎ করেন। গাছ গুলো কর্তনে করে সভাপতি নিজের গাড়িতে তাহার দুই ছেলে ফারুক আহমদ, সাবু আহমদ এবং সহযোগী মৃত মুছব্বির আলীর ছেলে আব্দুস শুক্কর পাতা মিয়া, আব্দুস শুক্কর পাতা মিয়া ছেলে রাজু আহমদ, মৃত ইব্রাহিম আলীর ছেলে আব্দুল কাদির এদের সহযোগীতায় নিজ গাড়িতে বহন করে বাড়িতে নিয়ে যান বলে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহ কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মলিক মিয়া ও প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমাদের বিদ্যালয়ে ভবন খুব জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যালয়ে উপরে থাকা দুই থেকে তিনটি গাছের ডালপালার কারণে বিদ্যালের ভবনে ক্ষতি হচ্ছে।এবং বিদ্যালয়ের পাশে থাকা কাটা জাতীয় বড়ই গাছ যা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে শিক্ষা অফিস কে অবগত করে রেজুলেশনের মাধ্যমে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব গাছ ও ডালপালা কর্তন করে বিক্রয় করা হয়েছে এবং বিক্রয়ের রশিদ রয়েছে।
জকিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,‘আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। গাছ কাটা কিংবা ভবনের সরঞ্জামাদি বিক্রি সংক্রান্ত কোনও অনুমতি স্কুল কর্তপক্ষকে দেওয়া হয়নি। শিগগিরই এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। যদি কেউ আইনবহির্ভূতভাবে গাছ কেটে বিক্রি করেন, তাহলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।