অনেক শিক্ষার্থী বা অভিভাবক আছেন যারা যোগাযোগ করে পরামর্শ চাচ্ছেন কোথায় ভর্তি করাবেন।
অনেকে বলতেছেন শহরে যেকোন একটা প্রাইভেট কলেজে ভর্তি করে মেয়ে বা ছেলেকে হোস্টেলে ভর্তি করে দিবেন।
আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই।
আপনি কি জানেন? শহরে ভাল গ্রেড ছাড়া কলেজে ভর্তি করাতে পারবেন না।
আপনি এত কষ্ট করে চাচ্ছেন শহরে ভর্তি করাতে কিন্তু ভাল গ্রেড না পাবার জন্য ভর্তি করাতে পারছেন না।
আপনার সন্তানকে কেন মফস্বল এলাকার কলেজে ভর্তি করাতে চাচ্ছেন না?
আপনি কি হিসাব মিলিয়ে দেখেছেন? শহরের কলেজ আর মফস্বল এলাকার কলেজের মধ্যে কোথায় ভাল লেখাপড়া করানো হয়।
তাহলে একটু হিসাব মিলিয়ে নিন।
এ প্লাস পেয়ে শহরের ভাল কলেজে ভর্তি করে দেই।
ভর্তি হওয়া ক্লাসের ফাইনাল পরীক্ষায় এ প্লাস পাওয়ার পর ঐ কলেজের প্রশংসা করে আত্মহারা হয়ে পড়ি।
মফস্বল এলাকার কলেজের দুর্নাম করে মাঠ গরম করে ফেলি।
লেখাপড়া ভাল হয়না,শিক্ষকদের দক্ষতা নেই কতরকমের কথা বলে মফস্বলের কলেজকে ছোট করে দেখি।
একবারও কি চিন্তা করে হিসাব মিলিয়ে দেখেছি?
যে কলেজে কোনভাবে পাশ করা শিক্ষার্থী ভর্তি করার পর ঐ ক্লাসের ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পর অনেকে এ প্লাস আবার অনেকে এ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
যে শিক্ষার্থী সি/ডি গ্রেড পেয়ে ভর্তি হল ঐ শিক্ষার্থী ফাইনাল পরীক্ষায় এ গ্রেড বা এ প্লাস পেয়ে উত্তির্ণ হয়ার পরও বলি মফস্বলের কলেজ ভাল নয় বা শিক্ষকদের দক্ষতা নেই।
শহরের কলেজে মূলত ভাল শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে।
এরাও আবার বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে সারাবছর কোচিং করার পর এ প্লাস পায়।
মফস্বলের কয়জন শিক্ষার্থী কোচিং করে পরীক্ষা দেয় দেখেছেন।
মফস্বলের কলেজের শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে খারাপ শিক্ষার্থীরাও ভাল ফলাফল অর্জন করতে পারে।
হ্যা শহরে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
তবে মফস্বলের কলেজের চেয়ে শহরের কলেজ সবদিক দিয়ে ভাল একথা কেউ বললে মেনে নিতে পারবনা।
যে কলেজের মধ্যে শিক্ষার্থী উন্নত হচ্ছে কি না? বুঝার সুযোগ নেই,শুধু ভাল ভাল শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে থাকে।
সেইসকল কলেজকে সবদিক দিয়ে ভাল বলব কিভাবে।
যদি মফস্বলের কলেজের মত সি/ডি গ্রেড পাওয়া শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে এ প্লাস পাওয়াতে পারতো, তাহলে ভাল বলার সুযোগ থাকতো।
আমি মনে করি,শিক্ষার্থীরা শহরে গিয়ে যে টাকা খরছ করবে ঐ টাকার অর্ধেক মফস্বলের কলেজে ভর্তি হয়ে খরছ করলে এ প্লাস পাওয়া কঠিন কিছুই নয়।
আমার দু’জন বোন বড় স্বপ্ন নিয়ে শহরের প্রাইভেট কলেজে ভর্তি করিয়েছিলাম।
কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি করিয়েছিলাম তার অর্ধেকও পুরন হয়নি।
ক্লাস শুরু হয়ার পর থেকেই ভার্সিটির শিক্ষার্থীদের দ্বারা ক্লাস শুরু করা হয়।
কয়েক দিন ক্লাস করানো পর কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে ঝামেলা সৃষ্টি হলে শিক্ষক চলে যান।
ক্লাস করানো কয়েকদিন বন্ধ।
আবার শুরু হয় নতুন শিক্ষক এনে ক্লাস।
কয়েকদিন পরেই তিনিও চলে যান।
এভাবেই প্রায় শিক্ষক যাওয়া আসার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষা চলে আসে।
এরমধ্যে ভাল ফলাফলের জন্য সারাবছর কোচিং করে ফাইনাল পরীক্ষা দেয়।
ফলাফল বের হওয়ার পর এ প্লাস বা ভাল রেজাল্ট হলেই কলেজের সুনাম করতে থাকি।
আমরা কি একটু চিন্তা করে দেখেছি?
এই ভাল ফলাফলের জন্য কলেজ কতটুক কৃতিত্ব পাবার দাবি রাখে।
সারাবছর শিক্ষক আসাযাওয়ার মধ্যে দিন চলে যায়,শিক্ষক দ্বারা কতটা ক্লাস করতে পারল।
শহরে স্থায়িভাবে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের জন্য কোন অসুবিধা নেই।
কিন্তু মফস্বল এলাকার শিক্ষার্থীরা শহরে গিয়ে লেখাপড়া করার চেয়ে, এলাকার কলেজে ভর্তি হয়ে মন দিয়ে লেখাপড়া করলে এ প্লাস অর্জন করা খুবই সহজ।
সম্মানিত অভিভাবকদের বলতে চাই।
আপনার সন্তানকে এলাকার কলেজে ভর্তি করিয়ে নিজের চোখের সামনে রেখে লেখাপড়া করান।
আপনার সচেতনতার জন্য, আপনার সন্তান সন্তুষ্টজনক ফলাফল করতে পারবে।
সাইফুর রহমান
সমাজ কর্মি।